বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থায় প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স হলো একটি বিশেষ ধাপ, যা স্নাতক (পাস কোর্স) ডিগ্রিধারীদের জন্য স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি অর্জনের প্রথম স্তর হিসেবে কাজ করে। এটি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিছু পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচালিত হয়। এই ধাপটি মূলত মাস্টার্স ফাইনাল কোর্সের জন্য শিক্ষার্থীদের মানসিক, শিক্ষাগত, এবং গবেষণার প্রস্তুতি নিশ্চিত করে।
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স কি?
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স একটি এক বছর মেয়াদি প্রাথমিক কোর্স, যা মাস্টার্স ফাইনাল কোর্সে ভর্তির যোগ্যতা অর্জনের পূর্বশর্ত। স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য এটি একটি বাধ্যতামূলক ধাপ। এখানে শিক্ষার্থীরা তাদের পঠিত বিষয়গুলোর উন্নত ও গভীরতর জ্ঞান অর্জন করে এবং গবেষণার প্রাথমিক দক্ষতা তৈরি করে।
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্সে কারা ভর্তি হতে পারবে?
1. যোগ্যতা:
- স্নাতক পাস ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীরা এই কোর্সে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- স্নাতক পর্যায়ে যেই বিষয় বা বিষয়গুলিতে পড়াশোনা করেছেন, সেই সম্পর্কিত বিষয়ে প্রিলিমিনারি কোর্সে ভর্তি হতে হবে।
- যারা অনার্স ডিগ্রি সম্পন্ন করেছেন, তাদের প্রিলিমিনারি কোর্স করার প্রয়োজন নেই; তারা সরাসরি মাস্টার্স ফাইনালে ভর্তি হতে পারেন।
2. বয়সের সীমা:
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স কোর্সে ভর্তির জন্য নির্দিষ্ট বয়সসীমা নেই। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী ভিন্নতা থাকতে পারে।
3. প্রতিষ্ঠানের নীতিমালা:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর নির্ধারিত নীতিমালা ও নির্দেশিকা অনুসারে শিক্ষার্থী নির্বাচন করা হয়।
আরো দেখুনঃ
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় মাস্টার্স প্রফেশনাল ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৪-২৫
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্সের সময়কাল ও কাঠামো
- কোর্সের মেয়াদ:
এটি সাধারণত এক বছর মেয়াদি একটি প্রাথমিক কোর্স। তবে বিষয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর নির্ভর করে মেয়াদে কিছু ভিন্নতা থাকতে পারে। - পাঠ্যক্রম:
- স্নাতক পর্যায়ে পড়ানো বিষয়গুলোর পর্যালোচনা।
- সংশ্লিষ্ট বিষয়ে উন্নত ধারণা এবং পঠনপাঠনের গভীরতা বাড়ানো।
- গবেষণা পদ্ধতি, রেফারেন্স লেখার নিয়ম, এবং থিসিস লেখার প্রাথমিক ধারণা।
- কিছু ক্ষেত্রে অ্যাসাইনমেন্ট এবং সেমিনারের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা হয়।
- পরীক্ষা পদ্ধতি:
- কোর্স শেষে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়।
- নির্ধারিত মান অর্জনের পর শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স ফাইনাল কোর্সে ভর্তি হতে পারে।
কেন প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স গুরুত্বপূর্ণ?
- উচ্চতর শিক্ষার ভিত্তি:
এটি স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার জন্য একটি ভিত্তি তৈরি করে। শিক্ষার্থীরা মাস্টার্স ফাইনাল কোর্সের জটিল বিষয়গুলোর জন্য মানসিক এবং শিক্ষাগত প্রস্তুতি অর্জন করে। - পেশাগত উন্নয়নের সুযোগ:
মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন কর্মক্ষেত্রে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি করে এবং ক্যারিয়ারের উন্নতির সম্ভাবনা তৈরি করে। - গবেষণার প্রস্তুতি:
- থিসিস বা গবেষণা কাজের প্রাথমিক ধারণা।
- উচ্চশিক্ষায় গবেষণা ভিত্তিক পেশায় আগ্রহীদের জন্য একটি শক্ত ভিত তৈরি করা।
- চাকরির জন্য যোগ্যতা:
অনেক ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি চাকরিতে মাস্টার্স ডিগ্রি আবশ্যক। প্রিলিমিনারি কোর্স সফলভাবে শেষ করা মাস্টার্স ডিগ্রির পথে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধাপ।
আরো পড়ুনঃ
প্রিলিমিনারী টু মাস্টার্স ভর্তি বিজ্ঞপ্তি ২০২৫
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স ভর্তির প্রক্রিয়া
- আবেদন প্রক্রিয়া:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী অনলাইনে আবেদন করতে হয়। - নথিপত্র প্রয়োজন:
- স্নাতক পাসের সনদপত্র ও নম্বরপত্র।
- জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মসনদ।
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি।
- ভর্তির ফি:
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী নির্ধারিত ফি প্রদান করতে হয়। - ক্লাসের সময়সূচি:
ভর্তি সম্পন্ন হওয়ার পরে প্রিলিমিনারি কোর্সের ক্লাস শুরু হয়। সাধারণত এটি সাপ্তাহিক ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।
প্রিলিমিনারি টু মাস্টার্স হলো এমন একটি কোর্স যা স্নাতক ডিগ্রিধারীদের মাস্টার্স ফাইনাল পর্যায়ে প্রবেশের জন্য প্রস্তুত করে। এটি শুধু একটি শিক্ষাগত ধাপ নয়, বরং শিক্ষার্থীদের একাডেমিক এবং পেশাগত উন্নতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। যারা উচ্চশিক্ষা এবং পেশাগত জীবনে অগ্রসর হতে চান, তাদের জন্য এই ধাপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।