শিক্ষনীয় গল্প আমরা শুনে থাকি বা বলে থাকি মূলত একজন ব্যক্তির ধারনার পরিবর্তন করার জন্য আবার অনেক ক্ষেত্রে অনুপ্রেরনা হিসেবেও শিক্ষনীয় গল্প বলা হয়ে থাকে। তো বন্ধুরা আজকে আমি আপনাদের সামনে ১০ টি অসাধারন শিক্ষনীয় ছোট গল্প বলব যা আপনার জিবন ধারনা পাল্টে দিতে সক্ষম হবে আশা করছি।
ভাঙ্গা খেলনা – শিক্ষনীয় ছোট গল্প
রাতুল ছিল তার বাবা মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান। তার কোন কিছুরই অভাব ছিল না। সে যা চাইতো তা হাত বাড়ালেই পেতো। তার আনন্দেরও কোন শেষ ছিলনা।
সারা দিন সে তার নানান খেলনা নিয়ে খেলতো। কোন খেলনা তার পছন্দ না হলে তা নিয়ে খেলত না এবং তা ছুড়ে ফেলে রাখতো। কোন খেলনা যদি পুরনো হয়ে যেত তাতেও তার ছিল ঘোরতর আপত্তি। এই খেলনা দিয়ে খেলতে সে রাজি নয়।
একদিন তার মামা তাদের বাসায় বেড়াতে আসলো। তিনি রাতুলের এইসব দেখে অনেক কষ্ট পেলেন। রাতুল তার মামার সামনেই তার কিছু পুরনো খেলনা ভেঙ্গে ফেললো।
মামা এটি দেখে তাকে তার ভাঙ্গা এবং পুরনো কিছু খেলনাসহ নিয়ে গেলেন পাশের একটি বস্তিতে। সেখানে কিছু দরিদ্র শিশুকে তার ভাঙ্গা, অকেজো খেলনাগুলো ভাগ করে দিলেন খেলতে।
রাতুল দেখে স্তম্ভিত হয়ে গেল। সে যে সব খেলনা ছুঁয়ে দেখতে চায় না, তা অনেকের কাছে সাত রাজার ধনের মত। খেলনার জন্য তারা হুড়োহুড়ি এবং হালকা ঝগড়াও শুরু করলো একে অপরের সাথে।
এটি দেখে রাতুল তার ভুল বুঝতে পারলো। সে ঠিক করলো যে, তার যা আছে তা সুন্দরভাবে ব্যবহার করবে। কোন কিছুই অকারণে, অবহেলায় নষ্ট করবেনা।
কিছু থাকার পরে আরও বেশি পাওয়ার জন্য চিৎকার চেঁচামেচি করবেনা। কেননা যা তার কাছে ছোট বলে মনে হয়, তা অনেকে ছুঁয়ে দেখারও সুযোগ পায়না।
আসুন আমরা আমাদের যা আছে তার সুষ্ঠু এবং পরিপূর্ণ ব্যবহার করি। কিছু নষ্ট করার আগে একবার ভেবে দেখি তাদের কথা যারা তাদের প্রয়োজনটুকুই পাচ্ছেনা।
নিজের জন্য যতটুকু প্রয়োজন তা থাকলে বাড়তিটুকু, বিশেষ করে যে সব বস্তু আমরা অবহেলায় ফেলে রাখি, তা অন্যদের দিই। হয়তো এতেই তারা তাদের জীবনে অনেক কিছু পেয়েছে বলে মনে করবে।
[গল্পটি ইন্টারনেট হতে সংগ্রহিত]
অতীত হচ্ছে একজন মানুষের সবচেয়ে, ভাল শিক্ষক:
বিল গেটস একটি রেস্টুরেন্টে খেতে গেছে খাওয়ার পর বিল গেটস ওয়েটারকে ৫ ডলার বকশিস দিল…
বকসিস পেয়ে ওয়েটার বিল গেটস এর দিকে হা করে তাকিয়ে রইল…. ওয়েটারের কাণ্ড দেখে বিল গেটস জিজ্ঞেস করল “কি হয়েছে? আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছ কেন?
ওয়েটার বলল “স্যার গতকাল আপনার ছেলে এইখানে নাস্তা করার পর আমাকে ১০০ ডলার বকসিস দিয়েছেন আর আপনি তার বাবা এবং এত বড় ধনী হয়ে আমাকে মাত্র ৫ ডলার দিলেন?”
বিল গেটস হেসে ওয়েটারকে বলল “সে হচ্ছে বিশ্বের এক নম্বর ধনী মানুষের ছেলে আর আমি হচ্ছি একজন কাঠুরিয়ার ছেলে”
কখনো আপনার অতীতকে ভুলে যাবেন না। অতীত হচ্ছে একজন মানুষের সবচেয়ে ভাল শিক্ষক।
আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়
একটি রুমের ভেতরে চারটি মোমবাতি জ্বলছিলো। মোমবাতি গুলো একে অপরের সাথে তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলা শুরু করলো। প্রথম মোমবাতি টি বললো, ‘আমি শান্তি। কেউ আমাকে জ্বালিয়ে রাখতে পারবেনা। আমি এখন নিভে যাবো।’ তারপর সেটি নিভে গেলো।
.
দ্বিতীয় মোমবাতি টি বললো, ‘আমি বিশ্বাস। শান্তি যেহেতু নেই, তাই আমার আর জ্বলতে থাকার কোনো প্রয়োজন দেখছিনা। আমি এখন এখন নিভে যাবো’। কথা শেষ করার পর দ্বিতীয় মোমবাতি টি নিভে গেলো।
.
তৃতীয় মোমবাতি এবার মুখ খুললো, আমি ভালবাসা। শান্তি এবং বিশ্বাস কেউ নেই, তাই আমারো বেশিক্ষণ জ্বলার মত শক্তি নেই। মানুষেরা আমাকে গুরুত্ব না দিয়ে একপাশে সরিয়ে রাখে। শুধু তাই না, ওরা প্রিয় মানুষ গুলোকে পর্যন্ত ভুলে যায়।” কথা শেষ করে তৃতীয় মোমবাতি টিও নিভে গেলো।
.
কিছুক্ষণ পর রুমের মধ্যে একটি বাচ্চা প্রবেশ করলো, তিনটা নিভে যাওয়া মোমবাতির পাশে টিমটিমে জ্বলতে থাকা চতুর্থ মোমবাতি দেখে বাচ্চা টি প্রশ্ন ছুড়ে দিলো, তোমরা জ্বলছো না কেন?
.
তোমাদের পুরোপুরি শেষ না হওয়া পর্যন্ত জ্বলা উচিৎ ছিলো। তারপর বাচ্চা টি কাঁদতে শুরু করলো। এবার চার নম্বর মোমবাতি টি মুখ খোলে। ‘ভয় পেয়ো না। আমি যতক্ষণ জ্বলছি, তুমি চাইলেই আমাকে দিয়ে আবারো বাকি মোমবাতি গুলোকে জ্বালাতে পারো। আমার নাম আশা। “বাচ্চা টি আশা নামের মোমবাতি টি দিয়ে একে একে বাকি মোমবাতি গুলোকে আবারো জ্বালালো। সমস্ত রুমটা আবারো উজ্জ্বল আলোতে আলোকিত হয়ে উঠলো।
গল্পটি রূপক কিন্তু হাজারো হতাশা, দুঃখ আর সমস্যার অন্ধকারে ডুবে গিয়ে আশা নামের আলোটি কে কখনোই নিভতে দেওয়া উচিৎ নয়। কারন আশা না থাকলে আমাদের জীবন থেকে শান্তি, বিশ্বাস এবং ভালবাসাও অন্ধকারে হারিয়ে যাবে।
কোন কিছুই আপনার উন্নতির পিছনে বাঁধা হতে পারে না
রবীন্দ্রনাথ স্কুল পালিয়েছেন। নজরুল তো বেশি পড়তেই পারলো না। লালন তো বুঝলই না স্কুল কি? আজ মানুষ তাঁদেরকে নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রী অর্জন করছে। আন্ড্রু কার্নেগীকে তো ময়লা পোশাকের জন্যই পার্কেই ঢুকতে দেয় নি। ৩০ বছর পরে উনি সেই পার্কটি কিনে ফেলেন আর সাইন বোর্ড লাগিয়ে দেন “সবার জন্য উন্মুক্ত”। স্টিভ জব শুধু মাত্র ১ দিন ভাল খাবারের আশায় ৭ মাইল দূরে পায়ে হেটে গির্জায় যেতেন। ভারতের সংবিধান প্রণেতা বাবা আম্বেদকর নিম্ন বর্ণের হিন্দু ছিলেন বলে স্কুলের বারান্দায় বসে বসে ক্লাস করতেন। কোন গাড়ি তাঁকে নিতেন না। মাইলের পর মেইল হেঁটে পরীক্ষা দিয়েছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বাজার থেকে চাঁদা তুলে পড়া লেখা করেছেন। উনি সবার ঋণ শোধ করতে পারলেও ওই চাঁদার টাকা শোধ করতে কোন দিন সাহস পান নি। সুন্দর চেহারার কথা ভাবছেন?শেখ সাদী (র) এর চেহারা যথেষ্ট কদাকার ছিল, লতা মুংগেস্কারের চেহারা মোটেই সুশ্রী নয়। তৈমুর লং খোঁড়া ছিলেন, নেপোলিয়ন বেটে ছিলেন। শচীন টেল্ডুল্কারের উচ্চতা তো জানাই আছে। আব্রাহাম লিঙ্কনের মুখ ও হাত যথেষ্ট বড় ছিল। স্মৃতি শক্তির কথা ভাবছেন? আইনস্টাইন নিজের বাড়ীর ঠিকানা ও ফোন নাম্বার মনে রাখতে পারতেন না।
#শিক্ষা :: কোন কিছুই আপনার উন্নতির পিছনে বাঁধা হতে পারে না। যদি কোন কিছু বাঁধা হয়ে দাঁড়ায় তবে তা আপনার ভিতরের ভয়। ভয়কে দূরে রেখে জয় করা শিখুন সাফল্য ধরা দিবেই।
জীবন পাথর নুড়ি আর বালির সমন্বয়ের একটা জটিল উদাহরন
একদিন এক দর্শনের শিক্ষক ক্লাশে আসলেন কতগুলো জিনিস নিয়ে এবং জিনিসগুলো তার সামনের টেবিলের উপর রাখলেন। যখন ক্লাশ শুরু হল, তিনি হাতে একটা বড় জার নিলেন এবং এটাকে পাথর দিয়ে ভরতে শুরু করলেন। তারপর তার ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন জারটি পূর্ণ কিনা, ছাত্ররা উত্তরে বললো হ্যা। এরপর তিনি কিছু নুড়ি পাথর নিয়ে জারটিতে ঢাললেন, তিনি যখন জারটি হাল্কা করে ঝাঁকালেন তখন নুড়ি পাথরগুলো বড়ো পাথরগূলোর ফাঁকে জায়গা করে নিলো।
তিনি আবার তার ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন জারটি পূর্ণ কিনা, ছাত্ররা উত্তরে বললো হ্যা। তারপর তিনি এক বাক্স বালি নিয়ে জারটিতে ঢেলে দিলেন, বালিগুলো জারের সমস্ত খালি জায়গা পূর্ণ করে ফেললো। তিনি আরও একবার তার ছাত্রদের জিজ্ঞাসা করলেন জারটি পূর্ণ কিনা, ছাত্ররা এবারো উত্তরে বললো হ্যা।
এরপর তিনি ছাত্রদেরকে বললেন, “এখন, আমি চাই তোমরা মনে করো যে জারটি তোমাদের জীবন। বড়ো পাথরগুলো হচ্ছে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলো – তোমার পরিবার, জীবনসঙ্গী, তোমার স্বাস্থ্য, তোমার বাচ্চারা। তোমার জীবন থেকে যদি এরা ছাড়া অন্য সবকিছু হারিয়ে যায়, তবুও তোমার জীবন পূর্ণ থাকবে। নুড়ি পাথরগুলো হচ্ছে – তোমার ঘর-বাড়ি, চাকরী ইত্যাদি। আর বালি হচ্ছে তোমার জীবনের অন্য সব ছোট ছোট জিনিসগুলো।
তুমি যদি জারটিতে প্রথমে শুধু বালি ভরতে তাহলে পাথর আর নুড়ি পাথরগুলোর জন্যে কোন জায়গা থাকতো না। একইভাবে, তুমি যদি তোমার সবশক্তি ছোট ছোট জিনিসগুলোর পিছনে খরচ করে ফেলো, তবে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসগুলোর খেয়াল ই রাখতে পারবে না। তাই তুমি প্রথমে তোমার পরিবারকে সময় দাও, তারপর অন্যকিছু।
সবকিছুর আগে বড় পাথরগুলোর যত্ন নিতে শেখো, যেগুলো তোমার জন্য অত্যন্ত মূল্যবান। বাকি সবকিছুই বালির মতো।
তিনটি সুন্দর ঘটনা “বিশ্বাস, ভরসা, আশা”
১. একদিন সব গ্রামবাসী মিলে সিদ্ধান্ত নিল তারা বৃষ্টির জন্য দোয়া করবে। সবাই সমবেত.হল,.কেবল.একটি ছেলে ছাতা সহ এলো।
—এটাই বিশ্বাস।
২. আপনি যখন কোন শিশুকে শুন্যে ছুঁড়ে খেলা করবেন, সে তখন হাসতে থাকে কারন সে জানে আপনি তাকে.আবার ধরে ফেলবেন।
——এটাই ভরসা।
৩.প্রতি রাতে আমরা যখন ঘুমাতে যাই, কোন নিশ্চয়তা নেই আমরা পরের দিন আবার জেগে উঠতে পারব। তবুও আমরা পরের দিনের.জন্য এলার্ম দিয়ে রাখি।
———এটাই আশা।
কাজেই সৃষ্টিকর্তার উপর বিশ্বাস, ভরসা এবং আশা রাখুন।……..
প্রয়োজন যার ফুরিয়েছে-আশ্রয় কি তার বৃদ্ধাশ্রম ?
একটা গল্প , হয়ত আমরা অনেকেই শুনেছেন। ছোট একটা সংসার। বাবা, মা, ছোট ছেলে এবং ছেলেটার দাদা।
দাদার অনেক বয়স হয়ে গেছে। কোন কাজ করার শক্তি। নেই। সারাদিন এক বিছানায় পড়ে থাকে। একদিন ছেলেটার বাবা একটা ঝুড়ির উপর বুড়োকে বসিয়ে জঙ্গলের উদ্যেশ্যে রওনা দিল। যাচ্ছে , যাচ্ছে।
বেশ কিছুদুর যাওয়ার পর ছেলেটা হঠাৎ তার বাবাকে জিজ্ঞেস করলো, “বাবা, তুমি দাদুকে ঝুড়িতে করে কোথায় নিয়ে যাচ্ছ?”
“তোমার দাদুকে আমরা এখন জঙ্গলের ভেতর রেখে আসবো”, বাবা উত্তর দেয়।
“কেন?”, ছেলেটা অবাক হয়।
“কারন তোমার দাদুতো বুড়ো হয়ে গেছে, কোন কাজ করতে পারেনা। আমাদের কোন উপকারেও লাগেনা। শুধু খায় আর ঘুমায়। কি লাভ তাকে বাসায় রেখে?
তাই তাকে আমরা জঙ্গলে রেখে আসতে যাচ্ছি। “
“ওহ!”, কিছুক্ষন কি যেন ভাবে ছোট ছেলেটা, তারপর বলল, “ঠিক আছে বাবা, কিন্তু দাদুকে রেখে আসার সময় আমরা কিন্তু অবশ্যই ঝুড়িটা নিয়ে আসবে।
“কেন”, একটু অবাক হয় বাবা।
“কারন, যখন আমি বড় হব, তুমি তো তখন বুড়ো হয়ে যাবে, দাদুর মত। তখন তুমি কোন কাজই করতে পারবানা। শুধু খাবা আর ঘুমাবা। তখন তো তোমাকে বাসায় রেখে আমার কোন লাভই হবে না। শুধু শুধু তখন টাকা খরচ করে নতুন ঝুড়ি কিনতে যাব কেন? এই ঝুড়িতে করেই না হয় তোমাকে জঙ্গলে রেখে যাব।”
ছেলের কথায় চমকে উঠলো বাবা। হঠাৎ করেই নিজের ভূল বুঝতে পারলো। বুঝতে পারলো সে যখন ছোট ছিল, যখন কোন কিছু করারই ক্ষমতা ছিলনা, তখন তার বাবা মা-ই তাকে যত্ন করে বড় করেছে। আজ তার বাবা বুড়ো হয়ে যেন শিশু হয়ে গেছে। ছোটবেলায় যেমন তার বাবা তাকে বুকের মধ্যে আগলে রেখেছিল, এখন তেমনি তার দায়িত্ব হলো তার বাবাকে আগলে রাখা। এই সময়ে তার বাবার প্রতি তার সেবা, হয়ত কিছুটা হলেও তার বাবার প্রতি ঋন শোধ করা হবে।
“মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষতের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর।”
খুব ছোট্ট এক ছেলে প্রচন্ড রাগী ছিলো। তার বাবা তাকে একটা পেরেক ভর্তি ব্যাগ দিল এবং বললো যে, যতবার তুমি রেগে যাবে ততবার একটা করে পেরেক আমাদের বাগানের কাঠের বেড়াতে লাগিয়ে আসবে।
প্রথম দিনেই ছেলেটিকে বাগানে গিয়ে ৩৭ টি পেরেক মারতে হলো। পরের কয়েক সপ্তাহে ছেলেটি তার রাগকে কিছুটা নিয়ন্ত্রনে আনতে পারলো
তা প্রতিদিন কাঠে নতুন পেরেকের সংখ্যাও ধীরে ধীরে কমে এলো।
সে বুঝতে পারলো হাতুড়ী দিয়ে কাঠের বেড়ায় পেরেক বসানোর চেয়ে তার রাগকে নিয়ন্ত্রন করা অনেক বেশি সহজ। শেষ পর্যন্ত সেই দিনটি এলো যেদিন তাকে একটি পেরেকও মারতে হলো না। সে তার বাবাকে এই কথা জানালো। তারা বাবা তাকে বললো, এখন তুমি যেসব দিনে তোমার রাগকে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করতে পারবে সেসব দিনে একটি একটি করে পেরেক খুলে ফেলো।
অনেক দিন চলে গেল এবং ছেলেটি একদিন তার বাবাকে জানালো যে সব পেরেকই সে খুলে ফেলতে সক্ষম হয়েছে। তার বাবা এবার তাকে নিয়ে বাগানে গেল এবং কাঠের বেড়াটি দেখিয়ে বললো, ‘তুমি খুব ভালভাবে তোমার কাজ সম্পন্ন করেছো, এখন তুমি তোমার রাগকে নিয়ন্ত্রন করতে পারো কিন্তু দেখো, প্রতিটা কাঠে পেরেকের গর্তগুলো এখনো রয়ে গিয়েছে। কাঠের বেড়াটি কখনো আগের অবস্থায় ফিরে যাবে না। যখন তুমি কাউকে রেগে গিয়ে কিছু বলো তখন তার মনে ঠিক এমন একটা আচড় পরে যায়। তাই নিজের রাগতে নিয়ন্ত্রন করতে শেখো।
“মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষতের চেয়েও অনেক বেশি ভয়ংকর।“
মানুষ তোমার সামনে যা প্রকাশ করে তা দেখে প্রভাবিত হয়ে যেয়ো না।
স্বামী আর স্ত্রী বেড়াতে গেল চিড়িয়াখানায়। তারা দেখল একটি বানর তার সঙ্গীনির সাথে খেলছে, খুনসুটি করছে। স্ত্রী দৃশ্যটা দেখে মুগ্ধ হয়ে স্বামীকে বলল: কী চমৎকার ভালোবাসার দৃশ্য!
এরপর তারা গেল সিংহদের খাঁচার কাছে। দেখল: সিংহ খাঁচার একপাশে চুপচাপ বসে আছে। সিংহীটাও অদূরে অন্য দিকে ফিরে বসে আছে।
স্ত্রী দেখে বলল: আহ! ভালোবাসার কী নির্মম পরিণতি! স্বামী এতক্ষণ চুপচাপ স্ত্রীর পাশে হাঁটছিল। এবার নীরবতা ভঙ্গ করে বললেন: ধরো! এই কাঁচের টুকরাটা সিংহীর দিকে ছুঁড়ে মারো, আর দেখো কী ঘটে!
মহিলাটি যখন কাঁচের টুকরোটা ছুঁড়ে মারল, সিংহ ক্ষিপ্ত হয়ে গেল।
সঙ্গীনিকে বাঁচানোর জন্য গর্জে উঠল। এবার মেয়ে বানরটার দিকে ছুঁড়ে মারো। দেখ কী ঘটে। পুরুষ বানরটার আচরণ লক্ষ্য কর। স্ত্রী কাঁচের টুকরোটা বানরীর দিকে ছুঁড়ে মারল। দেখা গেল ছুঁড়ে মারার আগেই বানরটা আত্মরক্ষার্তে ছুটে পালিয়ে গেল। সঙ্গীনির দিকে ফিরেও তাকাল না।
স্বামী বলল: মানুষ তোমার সামনে যা প্রকাশ করে তা দেখে প্রভাবিত হয়ে যেয়ো না। অনেক মানুষ আছে যারা তাদের বানোয়াট লোক দেখানো আবেগ-অনুভূতি প্রকাশ করে অন্যকে প্রতারিত করে। আবার অনেক মানুষ আছে যারা তাদের ভেতরে গভীর অনুরাগ- ভালবাসা লুকিয়ে রাখে। আর বর্তমানে সিংহদের চেয়ে বানরদের সংখ্যাই বেশি।
ইয়া আল্লাহ! আমাদেরকে আপনজনের সাথে অকৃত্রিম আচরণ করার তাওফীক দান করুন। আমীন
আরো পড়ুনঃ
১০ টি অনুপ্রেরণামূলক নীতি গল্প
যেখানেই ভালবাসা থাকে,সেখানেই সম্পদ ও সাফল্যও থাকে
এক মহিলা তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে দেখলো উঠানের সামনে তিনজন বৃদ্ধ ব্যক্তি বসে আছেন। তিনি তাদের কাউকেই চিনতে পারলেন না। তাই বললেন, ‘আমি আপনাদের কাউকেই চিনতে পারলাম না,কিন্তু আপনারা হয়তো ক্ষুধার্ত। আপনারা ভেতরে আসুন,আমি আপনাদের খাওয়ার ব্যবস্থা করছি।‘
তারা জিজ্ঞেস করলেন ‘ বাড়ির কর্তা কি আছেন?’ মহিলা বললেন,’না’। ‘তিনি বাইরে গেছেন।’ ‘তাহলে আমরা আসতে পারবো না।‘ সন্ধ্যায় যখন বাড়ির কর্তা ঘরে ফিরে সব শুনলেন তখন তিনি বললেন, ‘যাও তাদের বলো যে আমি ফিরেছি এবং তাদের ঘরে আসার জন্যে অভ্যর্থনা জানাচ্ছি।‘ মহিলা বাইরে গেলেন এবং তাদের ভেতরে আসতে বললেন।
কিন্তু তারা বললো, ‘আমরা এভাবে যেতে পারি না।’ মহিলা জিজ্ঞেস করলেন,’ কিন্তু কেন? আবার কি সমস্যা?’ বৃদ্ধ লোকেদের মধ্যে একজন বললেন,’আমাদের মধ্যে একজনের নাম সম্পদ।‘ আরেকজনের দিকে নির্দেশ করে বললেন, ’তার নাম সাফল্য এবং আমি ভালবাসা।এখন আপনি ভেতরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নিন আমাদের কাকে আপনি ভেতরে ঢুকতে দেবেন।’
মহিলা যখন ভেতরে গিয়ে সব খুলে বললেন তখন তার স্বামী অত্যন্ত খুশি হয়ে গেলেন এবং বললেন, ‘আসাধারন! চল আমরা সম্পদকে ডাকি, তাহলে আমরা ধনী হয়ে যাব!’ তার স্ত্রী এতে সম্মতি দিলেন না, ’নাহ, আমার মনে হয় আমাদের সাফল্যকেই ডাকা উচিত।’
তাদের মেয়ে ঘরের অন্য প্রান্তে বসে সব শুনছিলো। সে বলে উঠলো, ‘তোমাদের কি মনে হয় না আমাদের ভালবাসাকেই ডাকা উচিত? তাহলে আমাদের ঘর ভালবাসায় পূর্ন হয়ে উঠবে।’ লোকটি বললো,‘ঠিক আছে আমরা তাহলে আমাদের মেয়ের কথাই শুনবো, তুমি বাইরে যাও এবং ভালবাসাকেই আমাদের অতিথি হিসেবে ডেকে নিয়ে এসো।
‘মহিলাটি বাইরে গেলেন এবং বললেন ’আপনাদের মধ্যে ভালবাসা কার নাম? অনুগ্রহ করে তিনি ভেতরে আসুন, আপনিই আমাদের অতিথি।’
ভালবাসা নামের বৃদ্ধ উঠে দাড়ালেন এবং বাড়ির দিকে হাটতে শুরু করলেন, বাকী দুজনও উঠে দাড়ালেন এবং তাকে অনুসরন করতে লাগলেন। মহিলাটি এতে ভীষন অবাক হয়ে গেলেন এবং বললেন, ‘আমিতো শুধু ভালবাসা নামের বৃদ্ধকে ভেতরে আসার আমন্ত্রন জানিয়েছি, আপনারাকেন তার সাথে আসছেন?’
বৃদ্ধ লোকেরা বললো,’আপনি যদি সম্পদ আর সাফল্যকে আমন্ত্রন করতেন তবে আমাদের বাকী দুজন বাইরেই থাকতাম, কিন্তু আপনি যেহেতু ভালবাসাকে আমন্ত্রন জানিয়েছেন, সে যেখানে যায়, আমরা দুইজনও সেখানেই যাই।
যেখানেই ভালবাসা থাকে,সেখানেই সম্পদ ও সাফল্যও থাকে।
ধন্যবাদ গল্প গুলো অসাধারণ ছিলো।
পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ
যেখানেই ভালবাসা থাকে,সেখানেই সম্পদ ও সাফল্যও থাকে হুম এটা ঠিক।
হ্যাঁ ঠিক বলেছেন