১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের কবিতা

১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের কবিতা। বন্ধুরা আজ ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১ সালের এই দিনে আমরা হানাদার বাহিনীদেরকে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য করি আর পাই একটি স্বাধীন দেশ আর আজ সেজন্যই বিজয় দিবস পালন করি। আমাদের সকলের উচিত আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানা। কারন সঠিক ইতিহাস না জানলে কখনোই এর গুরুত্ব উপলব্দি করতে পারবো না। তো বন্ধুরা বিজয়ের সঠিক ইতিহাস জানি এবং যারা মুক্তিযুদ্ধ করেছেন ও শহীদ হয়েছেন আর যে সকল মা-বোনেরা তাদের সম্ভ্রম হারিয়েছেন তাদেরকে সম্মান করি। আর এই বিজয়ের কবিতা গুলো পড়লে যেকারও মধ্যেই মুক্তিযুদ্ধের চিন্তা-চেতনা ফুটে উঠবে।

 

বিজয় ডিসেম্বর

সিফাত আহমেদ

লাল সবুজের স্মৃতি ঘেড়া নিশান আমার উড়ে।

কিনেছিলাম রক্ত দিয়ে বিজয় ডিসেম্বরে।

মাগো তোমার চোখের জলে,

জয় বাংলা ধ্বনি তুলে,

হাজার ছেলে প্রাণ দিল ঐ নতুন আশার ভোরে।

রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

 

মাগো তুমি হায়েনা ভয়ে কাঁদছ দেখে তাই।

তোমার ছেলে ঘর ছেড়েছে তোমায় দিতে ঠাঁই

বিশ্বমাঝে উচ্চাসনে,

পাক বাহিনীর নির্যাতনে,

আর হবেনা শোষন এবার তোমার আপন ঘরে।

রক্ত দিয়ে কেনা এই বিজয় ডিসেম্বরে।

 

শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ

তাসফিয়া তাবাসসুম

বাঙ্গালীর সেই বিজয়ের হাসি হীরে হয়ে জ্বলবে,

যুদ্ধাপরাধীর বিচারের দাবী দেশজুড়ে চলবে।

যাদের ত্যাগের বিনিময়ে এসেছিল এই বিজয়,

তাদের স্মরণে করবো এবার মোরা বিশ্বজয়।

শাহাবাগের বহু কন্ঠে জেগে ওঠো আমার দেশ,

সবশেষে তাই বলতে চাই…

শুভ জন্মদিন, বাংলাদেশ!

 

বিজয় নিকেতন

অতনু সাগর

আবার এলো ফিরে

ধানসিঁড়িটির তীরে

বাংলার বিজয় ক্ষণ

এসো মাতি আনন্দে

নাচি গাই ছন্দে ছন্দে

ভেসে যাই বিমুগ্ধ সমীরণ।

 

ভুলিনি কখনো মোরা

দেশসেরা সন্তান,

যারা বিলিয়েছিল প্রান ও মন

উড়েছিল বাংলার পটে

সাগরসম রক্তের তটে

স্বাধীন বাংলার বিজয় নিকেতন।

 

১৬ই ডিসেম্বর

অন্তু সরকার প্রণব

১৬ই ডিসেম্বর এলে

মনটা আমার কেমন কেমন করে

সোনার ছেলেরা যে যুদ্ধে গিয়ে

আর ফেরেনি ঘরে।

 

পাক হানাদারদের ওই হাতে

মরলো মানুষ দিনে রাতে

দেশের জন্য জীবন দিয়ে

শহীদ হলো তারা তাতে।

 

নয় মাস যুদ্ধ করে

সব হানাদার হলো শেষ

সৃষ্টি হলো এক নতুন দেশের

দেশের নামটি বাংলাদেশ।

 

এই বিজয়ের মাঝেও যে

অনেক কষ্ট আছে

জীবন দিয়ে লাখো মানুষ

শহীদ হয়ে গেছে।

 

৪২ বছর পরে এসে

ষোলই ডিসেম্বরে

দেশকে মোরা কী দিয়েছি

দেখি হিসাব করে।

 

দেশের মানুষ থাকুক ভালো

মিলিয়ে কান্না হাসি

আসো সবাই একটু হলেও

দেশকে ভালোবাসি।

 

বিজয় ১৯৭১

জাহিদুল ইসলাম

একাত্তরের বিজয় দেখিনি আমি

করতে পারেনি যুদ্ধ,

  হাট্টিমাটিম টিম কবিতা

তবে এতটুকু জানি তখন

পারতাম না থাকতে স্তব্ধ।

বারুদের মত উঠতাম জ্বলে

আকাশ বাতাস সাজাতাম ফুলে ফুলে…

পতাকা বুকে নিয়ে আকাশে দিতাম দু’ডানা মেলে…

 

বিজয় মানে

আকতার উজ জামান

বিজয় মানে জয়োল্লাল

বিজয় মানে হাসি,

বিজয় মানে স্বাধীন বাংলা

রাজাকারের ফাঁসি !

 

বিজয় মানে একাত্তর

আর রক্তঝরা দিন,

সময় এসেছে আজকে আবার

শুধবো মোরা ঋণ !

 

বিজয় মানে বাংলা মায়ের দামাল ছেলের

রক্তে ভেজা হাসি,

আয় সবে মিলে এক সুরে বলি

মোরা বাংলাকে ভালবাসি|

 

স্বাধীনতা আমার স্বাধীনতা

রিফাহ্ তাসনিয়া

বাংলাদেশের লাল সবুজ পতাকায়

আমার এ মন রাঙালোরে

বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা পেয়ে

আমার এ প্রাণ জুড়ালোরে।

অনেক রক্ত ঝরিয়ে পেলাম

আমার এই প্রিয় দেশটাকে।

আমরা সাজাবো মনের রঙে

এদেশের শুরু শেষটাকে।

রক্ত ঝরলো একুশে ফেব্রুয়ারিতে,

রক্ত ঝরলো ২৬ মার্চে,

অনেক রক্ত ঝরিয়ে ১৬ ডিসেম্বরে

দেশটা স্বাধীন হলো অবশেষে।

যুদ্ধ করে বাঙালিরা পেল বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ না পেলে দুঃখ পেতাম বেশ।

 

১৬ ডিসেম্বর

তানজিম এ আল আমিন

বছর ঘুরে আবার এলো ষোলই ডিসেম্বর

বিজয় গানে উঠলো মেতে মানুষ আপামর।

 

একাত্তর এর সেই সে বিজয়

করলো স্বাধীন সকল হৃদয়

শোষন ত্রাসন করলো বিদায়

করলো নতুন সূর্য উদয়

 

সেই সূচনায় আমরা সবাই স্বাধীন নিরন্তর,

বছর ঘুরে আবার এলো ষোলই ডিসেম্বর।

 

পাগলী মা টা

জনি হোসেন

ফিরে এল বিজয় দিবস

নেইতো খোকা ঘরে,

সেই যে গেল আর এলোনা

যুদ্ধে একাত্তরে।

 

স্বপ্ন বোনে পাগলী মা’টা

ফিরবে খোকা কবে,

ফুলেল মালা গলে দিবে

ফুল ঝরে যায় টবে।

 

ছেলে আসবে,আসবে ছেলে

পাগলী মা’টা চ্যাঁচায়,

পাগলী মা’টা রুক্ষ সুক্ষ

যত্ন নিতে কে চায়?

 

প্রতিবারে বছর শেষে

বিজয় যখন আসে,

ছেলে হারা পাগলী মা’টা

দাঁত খিলিয়ে হাসে।

 

বিজয়ের দিন

তাসনিয়া আহমেদ

বাংলাদেশে পাক-শাসনের আসন যেদিন টলে,

সেদিনটাকে আজকে সবাই ‘বিজয় দিবস’ বলে।

বিজয় কিন্তু অনেক দামী; সহজলভ্য নয়।

মুক্তিসেনা বিজয় আনে জয় করে সব ভয়।

 

লাল সবুজের পতাকাটার আজকে খুঁটি শক্ত

আনতে সেটা,বীর সেনারা দিয়েছিলো রক্ত।

বাংলা মায়ের বীর ছেলেরা ভয় পায়না মোটে।

তাদের ত্যাগে মোদের মুখে বিজয় স্লোগান ফোটে।

 

বিজয় দিবস রক্তে ধোয়া,বীর শহীদের স্মৃতি।

বিজয় নিয়েই আজকে লেখা-কবিতা আর গীতি।

বিজয় মাখা ফুলে-পাতায়,বিজয় সবুজ ঘাসে।

বছর ঘুরে এদিন যেন বারে বারে আসে!

 

বিজয় দিবস

মাশায়েখ হাসান

৭১’এ এই দেশেতে

হানাদার হানা দেয়।

দেশকে স্বাধীন করতে বাঙ্গালী

অস্ত্র তুলে নেয়।

  মহান বিজয় দিবসের ইতিহাস এবং অজানা কিছু কথা

 

৭১’এর এই দিনেতে

হয় সীমাহীন যুদ্ধ।

যার কাহিনী শুনলে মোদের

শ্বাস হয়ে যায় রুদ্ধ।

 

৩০ লক্ষ শহীদ আর

মা-বোনের বিনিময়।

স্বাধীন বাংলাদেশ এর ঘটে

উদার অভ্যূদয়।

 

বিজয়ের কবিতা

মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ

একটি প্রাণের দেশ আমার

এক টুকরো হিরে

স্বর্গ ফিরে পাই রে ও মা

যখন ফিরি নীড়ে।

 

তোর হাসিটা রাখতে ধরে

দিলেন যারা প্রাণ

মনে প্রানে গাইব সদা

তাদের জয়গান।

 

বিজয় দিবসের কবিতা

তানভীর মাহাতাব

মানচিত্রটার জন্ম যেদিন

সেদিনটা তো দেখিনি

ইতিহাস আমায় জানিয়েছে

অনুপ্রেরণার কাহিনী।

 

কতশত আত্মত্যাগ

আছে আজও আর্তনাদ

বিষ্ময় নিয়ে শুনি সেসব

ছাড়িয়ে গর্বের বাঁধ।

 

আসছে বাধা চলার পথে

অর্জনে এগিয়ে বেশ

তরুণ প্রজন্মদের নিয়ে

স্বপ্ন বুনে বাংলাদেশ।

 

একটি পতাকা

তৌহিদুর রহমান

এইতো দেখো জানলা দিয়ে যাচ্ছে দেখা ঐ|

লাল সবুজের একটি কাপড় উড়ছে অজান্তেই|

ঝড় লেগেছে,রোদ পড়েছে কাপড় টুকু বেয়ে|

তবুও দেখো দুলছে কাপড় হাসছে কেমন চেয়ে|

 

চারদিকে তার ভীষণ সবুজ, যেমন সবুজ ঘাস|

মাঝখানেতে দুঃখ নিয়ে রক্তে রঙিন লাশ|

আর আছে তার স্নিগ্ধ ছায়া ক্লান্ত রোদের পর|

স্বাধীন হয়ে বাচতে শেখার চড়ম অহংকার|

জানলা দিয়ে তাকিয়ে তুমি দেখো আরেকবার|

ঐ তো কেমন উড়ছে স্বাধীন পতাকা আমার|

 

কেমন স্বাধীনতা!

শাহ্ আলম শেখ শান্ত

হে শহিদ ভাইয়েরা , এ কেমন স্বাধীনতা দিলে উপহার ?

সতেজ রক্তের গন্ধ শুকি শ্বাস নেই যতবার ।

 

পরাধীনতার অগ্নি শিকলে মোরা আবদ্ধ কয়েদি

সমাধি দ্বার অবারিত করে আপন নেত্রে হেরিতে যদি –

দীঘল শ্বাসে করতে পরিতাপ ! যার লাগি দিছো প্রাণ

সেখানে আজ সহস্র অযুত গড়ছে মহা শশ্মান ।

 

আপন নিলয়ে আসেনা নিদ্রা প্রাণ নাশের ত্রাসে

ভেবে দেখ কোথায় আছি কেমন স্বাধীন দেশে ?

রক্ত পাথারে ভাসছি হাবুডুবু খাচ্ছি অশ্রু কল্লোলে

হতাশ গিরি কষ্ট মরু অশান্তি হেরি প্রতি শ্বসলে –

শাসক সেবক সাধারণের রক্ত পিপাষু ভাই

স্বাধীন দেশে বাক স্বাধীনের কোনই সুযোগ নাই ।

 

এমন লাশের স্তুপ দেখি একাত্তরকে মানায় হার

রক্ত লাশ আর অগ্নিকাণ্ড দৈনিক সমাচার

খিড়কি খুলে আঁখি মেললে শুধু লাল দেখা যায়

বিনার্থে জুটছে আজ রক্ত আলতা পায় ।

 

রাজ পথ দেখি রক্ত সাগর খর ধারা বয়ে যায়

নিরীহ আর সত্য সেনার রক্ত ঊর্মি দোল খেলায়

লাল শ্যামলের পতাকাটি বদলে যাচ্ছে ভাই

সবুজ বরণ দেখিনা আর লাল দেখতে পাই ।

 

বৈদেশী জলে করে ওরা কোমল তনুর স্নান

বৈদেশি সুগন্ধী বারি করছে সদায় পান

দেশ প্রেমের বেশে ওরা স্বদেশের ধন করছে চুরি

  বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে কবিতা ছড়া ছন্দ

হারাম অর্থ গিলে গিলে মোটা করছে নাড়-ভুরি ।

 

দূর্বলকে মারছে লাথি দূষণ রক্তের উষ্ণতায়

ওদের কলিজা সোয়া সের আজ দূর্নীতির ক্ষমতায়

সহ্যের বাঁধ টুটেছে আজ ধৈর্য্য নাইকো আর

শক্ত হস্তে মটকাতে হবে দুঃশাসনের ঘার ।

অত্যাচারি যত সৈরশাসক দূর্নীতিবাজ নেতার

যারা মেসন তুল্য সার্থের লাগি গোশত খায় জনতার ।

 

নবীন বেগে নব তেজে জেগে ওঠো জনগন

অস্ত্র হস্তে দূর্নীতিকে করতেই হবে দমন

মোরা বাঙ্গালী নেই ডর ঢেলে দিতে কাচা রক্ত

মিথ্যা হটিয়ে বিজয় ছিনিতে সদা থাকি মোরা মত্ত ।

 

দেরি সহে না ভেদিয়া সমাধি ফের দিতে আয় প্রাণ

অবিরাম বাজিছে বক্ষ বীণায় খাঁটি স্বাধীনের জয়গান

রাজা-প্রজা আমরাই তো ভাই এ দেশ হল সবার

দেশকে মোরাই রক্ষা করব ঘুমাইওনা আর।

 

এগুলো অবশ্যই পড়ুন—

 

মহান বিজয়

ফখরুল কবির

বিজয় তুমি ১৬ই ডিসেম্বর, লাখ শহীদের রক্ত মাখা প্রাণ—

বিজয় তুমি শাশ্বত বাংলার সোনালী ফসল-সরষে ফুলের ঘ্রাণ।

বিজয় তুমি সুন্দর বনের চিত্রাহরিণ আর দোয়েল,শ্যামা,টিয়া—

বিজয় তুমি উত্তাল সমুদ্র ঘেরা, সেন্ট মার্টিন-কুতুবদিয়া।

বিজয় তুমি শীতের সকালে শিশির ভেজা ঘাস,

বিজয় তুমি বিশ্বখ্যাত বাংলার সোনালী আঁশ।

বিজয় তুমি জেমসের সোনার বাংলা-আমি তোমায় ভালবাসি,

বিজয় তুমি হায়দার হোসেনের গণতন্ত্রের হাসি।

বিজয় তুমি লাখ শহীদের রক্তভেজা দান,

বিজয় তুমি লাখ বাঙালীর মুক্তি কামী প্রাণ।

বিজয় তুমি জর্জ হ্যারিসানের স্বপ্নের বাংলাদেশ—

বিজয় তুমি লজ্জাবতী পল্লী তরুনীর মেঘবরন কেশ।

বিজয় তুমি বিশ্ব মানচিত্রে নতুন একটা দেশ—

বিজয় তুমি ছিনিয়ে এনেছ সোনার বাংলাদেশ।।

 

১৬ ডিসেম্বর

শাহ্ আলম শেখ শান্ত

বিজয় হয়েছে আজ লাল ও সবুজের

জান দিতে হয়েছে লক্ষ বুঝ অবুঝের

হয়েছে স্বাধীন আজ এই সোনার বাংলাদেশ

সুজলা-সুফলা সোনালী ক্ষেতের সমাবেশ ।

প্লাবিত হয়েছে এদেশ আজ বিজয় উল্লাসে

প্রিয়জন হারা অসহ্য শোক ভুলে গেছে হেসে

বুঝেছে দারুণ অত্যাচারী এজাতি নয় ক্ষীণ

অন্যায় রুখতে সজ্জিত থাকে নিশিদিন ।

নতশিরে করে না আপোশ অত্যাচারির ঠেস

রক্ত দিয়ে যতনে গড়েছি সোনার বাংলাদেশ

জলন্ত প্রমাণ তার ১৬ ই ডিসেম্বর

ক্ষমার মঞ্চেও হানাদার কেঁপেছিল থত্থর !

অন্যায়ের গলা টিপে ধরি ভয়কে করি জয়

অক্ষয় ইতিহাস ধরার বুকে বাঙালির  পরিচয়

এদিনেই লিখেছি ধরার বুকে রক্ত দিয়ে বিজয় গাঁথা

চিনে গেছে বিশ্বজাতি বাঙালিদের উঁচুমাথা ।

12 thoughts on “১৬ই ডিসেম্বর বিজয়ের কবিতা”

  1. গৌরবময় বিজয় দিবস এর অগ্রীম শুভ্চ্ছো রইলো নিউ ইয়োর্ক থেকে শামীম হাসান।

    Reply

Leave a Comment